মৃন্ময় ৭৩

এভাবেই ক্রমশ রাস্তা যায় সরে
সকালে এক কদম, দুপুরে দুই, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত
বিরতিহীন নীরবতায় অস্ফুট গোঙানি
মনে হয় আজ নয়, কথা হোক কাল
তারপর দীর্ঘ বিরতিতে এভাবেই ব্যবধান বাড়ে।
 
পাশাপাশি বিপরীতমুখী দুটি নিষ্প্রাণ দেহ
আলোচনা সময়ের দাবী, বোঝেনা কেহ
ঝুলে থাকা ফ্যানে নিঃশ্বাস বাতাস ছড়ায়
লাগামহীন শেকলবাঁধা অক্ষমতা জন্মবৃত্তান্ত খুঁজে
শুয়ে পড়ে এলোমেলো ভাবনায় ক্লান্তিহীন- লাশ হয়ে।
 
এভাবেই ক্রমশ দূরত্ব বাড়ে কারণে-অকারণে
সময়ের ঘূর্ণয়নে ভুলগুলো বিষণ্ণতা হয়ে প্রতিশোধ নেয় প্রতিরাতে
দীর্ঘশ্বাস উড়ে যায় সুদূর আকাশে মেঘ হয়ে
দ্বায়বদ্ধ জীবন আজন্ম মরে খাঁচার পাখি হয়ে।
 
চোখ ভিজে উঠলে অন্ধকারে নির্জনতা ভেঙ্গে, বুকে মরণ পুষে
অভিমান তরতর করে বাড়ে
ভাঙ্গা পাজরের নিচে সম্পর্ক সমাধির কবর খুঁড়ে
একা একা জ্বলে যায় জলজ ঘ্রাণে স্বস্তির খুঁজে।
 
এভাবেই ক্রমশ ব্যবধান বাড়ে তোমার মাঝে, আমার মাঝে
বরফের মত বুকের ভিতর বীভৎস স্বপ্নের নিষ্ঠুরতা
প্রতিশোধের শব্দ খুঁজে বুক জ্বালিয়ে দেয়
অবরুদ্ধ মন ঘুমিয়ে পড়ে অনুভূতির কাছে হার মেনে
অদূরে ফুঁসে উঠে সমুদ্র জল; সবুজ অরণ্যে নীল ফুল
শেষ রাতে বাক্যহীন অন্তরদ্বন্ধে কেঁদে উঠে আঁচলে টানা মুখ।
 
এভাবেই ক্রমশ রাস্তা যায় সরে
সকালে এক কদম, দুপুরে দুই
জলস্পর্শের মত ছুঁয়ে যাওয়ার ইচ্ছা,
মনের কাঁচা ভিটায় রংহীন জন্মান্ধ জ্যোৎস্না ছুঁড়ে দেয়।
এভাবেই একদিন, তৃষ্ণার্ত চোখে আকাশের বুকে নীল-
স্থির হয়ে যায়।